তুমি কোথায় ছিলে
সাহিত্য ডেস্ক:
তোমাকে নিয়ে কিছু কথা লিখব বলে দুই দিন-দুই রাত জেগে ছিলাম। মুঠোফোন, ডায়েরি, কলম সবকিছু হাতের কাছে বিছানা–বালিশের পাশেই রেখেছিলাম। তুমি এলেই আমি শুরু করব লেখা। কিন্তু তুমি কোথাও ছিলে না, কোথাও না।মুঠোফোনের পর্দায় তোমার সেই মায়াবি ছবি ভেসে ছিল। অথচ কী আশ্চর্য! সেখানে তুমি ছিলে না। ডায়েরির পাশে জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ বইটি ছিল, সেখানেও খুঁজেছি তোমায়; তুমি ছিলে না। ‘সুরঞ্জনা’, ‘দুজন’, ‘সবিতা’, ‘তুমি’ প্রতিটি কবিতার অক্ষরে অক্ষরে তোমায় খুঁজেছি; তুমি ছিলে না সত্যি বলছি। কোথায় ছিলে তুমি?
মধ্যরাতে দেশলাই আর সিগারেটের প্যাকেট হাতে বাইরে বেরিয়েছিলাম তোমাকে খুঁজতে। নির্জন রাতে ঝিঁঝি ও জোনাকিরা ছাড়া আর কেউ ছিল না সেখানে; তুমিও ছিলে না। ঝিঁঝির সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়নি, তবে তাদের আওয়াজ শুনে উপলব্ধি করেছি। আর জোনাকিরা মধ্যরাতেও অবুঝ শিশুর মতো খেলা করছিল। আমি প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে আগুন জ্বেলে জোনাকিদের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম তোমার কথা। তারা আমার কথায় কোনো গুরুত্ব দিল না। আমি হতাশ হয়ে চলে এলাম তিন রাস্তার মোড়ে। সেখান থেকে আকাশ বেশ ভালো দেখা যায়।
সারাটা আকাশে তোমায় খুঁজলাম; কোথাও পেলাম না। চাঁদের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, ওটা তুমি! জিজ্ঞেস করতেই চাঁদ বলে উঠল, ওটা তুমি নও। আমার সিগারেটের আগুনও ফুরিয়ে গেল, মধ্যরাত হলো ভোররাত। হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। বাড়িতে ফিরে ডায়েরি খুলে কলম হাতে নিলাম। ডায়েরির ভাঁজে রাখা প্রিন্ট করা তোমার ছবিটা দেখতে লাগলাম; সে ছবিতেও তোমাকে পেলাম না।
‘খুঁজেছি তোমায় পথে–ঘাটে, আকাশের সবখানে।
কোথাও ছিলে না তুমি,
ছিলে শুধু আমার কল্পনায়, হৃদয়ে ও স্বপ্নে।’