Breaking News :

ভোলায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

অনলাইন ডেস্ক :

ভোলায় ২৩ বছরের এক কিশোরকে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনা পুলিশের অজানা ছিল। ভোলা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের বান্দের পাড় এলাকায় একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ওই কিশোরকে নির্যাতন করা হয়।

এসময় ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জসিম খালাসি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সামনেই তাকে নির্যাতন করা হয়। রহিম নামে এক যুবক নির্যাতনের ওই ভিডিওটি তাঁর মোবাইলে ধারণ করেন। পরে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে ভোলা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের বান্দের পাড় এলাকায় তাকে নির্যাতন করা হয়। ওইদিন দুপুরেই শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোতাহার জমাদ্দার তাকে নিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই কিশোরের নাম মো. তাহের আলম (২৩)। সে বরিশাল অঞ্চলের শ্রীপুর আনন্দ বাজার এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় জেলে। তেঁতুলিয়া নদীতে সে মাছ শিকার করে।

দুই মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক লোক তাঁর ডান হাতে রশি পেঁচিয়ে দোকানের একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে নির্যাতন করছে। এসময় নির্যাতিত কিশোর ‘মারে-বাবারে’ করে চিৎকার দিতে থাকে এবং বারবার নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আকুতি জানান। এসময় সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ উপস্থিত ছিলেন।

মোবাইলে ভিডিও ধারণা করা কিশোর রহিম জানান, গরু চুরির ঘটনার সন্দেহে তাকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনকারী ওই লোকের নাম উপস্থিত কারো জানা নেই। তবে তিনি ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের শুটিং স্কুল এলাকার চৌকিদার।

ইউপি সদস্য জসিম খালাসি জানান, সকালে ওই কিশোরকে বান্দের পাড় এলাকায় দেখতে পান তিনি। এসময় তিনি তাঁর পরিচয় জানতে চান। তাঁর পরিচয় জানার একপর্যায়ে সেখানে অনেক লোকের সমাগম ঘটে। এসময় নির্যাতনকারী ওই চৌকিদার মোটরসাইকেল যোগে তাঁর চুরি হওয়া গরু খোঁজতে বের হয়ে সেখানে ওই কিশোরকে দেখতে পান। একপর্যায়ে তিনিও ওই কিশোরের পরিচয় জানতে চান। সে শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা হয়েও এখানে কেন এসেছে এমন প্রশ্ন রেখেই তাকে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন। জোরপূর্বক তাঁর গরু কে চুরি করেছে তা জানতে চান। কিন্তু কিশোর বারবারই চুরি সংক্রান্ত কোনো ঘটনা জানেন না বলে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আকুতি জানান। কিন্তু নির্যাতনকারী তাকে নির্যাতন করতেই থাকেন।

ইউপি সদস্য আরো জানান, কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই চৌকিদার তাকে মারতে শুরু করেন। তাকে থামানোর চেষ্টা করেও কেউ থামাতে পারেনি।

শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোতাহার জমাদ্দার জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম খালাসি তাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে নেন এবং তাকে তাঁর হাতে তুলে দিলে তিনি তাকে নিয়ে শ্রীপুর চলে যান। এরপর শ্রীপুরে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাপ্তা ইউনিয়নের শুটিং স্কুল এলাকায় গিয়েও ওই নির্যাতনকারীকে খোঁজে পাওয়া যায়নি।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, এ ঘটনাটি তাঁর জানা নেই। আজ সারাদিন তিনি ব্যস্ত ছিলেন। এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।